প্রতিটি শস্য ঘুমিয়ে আছে নিজস্ব দিনের অপেক্ষায়, মাচায় তোলা আছে স্বাদ,সুধা আর স্রোত।
এইবার রক্তে কেউ কোনো ছবি আঁকবে না!
এইবার লাশে কেউ কোনো পথ বানাবে না!
নবান্নের নতুন বউ দুই বিঘা জমির আলে ঘুরে ঘুরে দেখে নেয় প্রেমিকপুরুষের প্রস্তাব ও পালনশক্তি।
ছিদাম আর তারাপদ একসঙ্গে বাঁশি শুনে অপেক্ষা করে ঘরে ফিরে আসার,অমল দইওয়ালার কাছে শিখে নেয় দই বসানোর কারুকাজ,শান্তির মিছিল নয়,আশ্রয় সন্ধানে নিজেদের পথ করে হাঁটে শচীশ আর গোরা
সংগীতহারা সব পাতা আঁচল হয়ে উঠুক,নদী এসে মিশে যাক প্রতিটি গল্পের শরীরে
নীল আকাশ মানুষকে ঈশ্বর করেনি,দিগন্ত থেকে আসেনি মহাভারতীয় সঞ্জয়চোখ,পূজা ফেলে,স্তব ফেলে,মন্ত্র বা আয়াত ফেলে
শুধু মাঠের মতো প্রতিটি পাতা খুলে দেখলে মনে হয়,ক্ষেতে ক্ষেতে শস্যকণা নয়,প্রণাম ফলে আছে।
উথালপাথাল কাহিনীগুলো,
আঁচড় কাটে জীবন পাতায়-
মিথ্যে ভরা সত্যিগুলো,
পরে ভাবলে শুধু কাঁদায়।
ভাবনাগুলো বন্দী আজ,
স্তব্ধ আমার ভাষা,
গুমরে থাকা শব্দগুলো-
হাতড়ে বেড়ায় আশা।
শব্দগুলোও ক্লান্ত বড়ো,
খুনে প্রেক্ষাপটে-
অক্ষরগুলো লড়ছে তবু,
আজকে জীবনতটে।
এই অক্ষরেরা ধারালো ভীষণ,
ছন্দ বড়োই সোজা,
আমার আমি-কে চিনবে না তুমি-
বৃথাই তোমার খোঁজা।
মিলতে চাই আরও একবার
যেখানে রাত আসে বিজলী বাতির আলোয়,
চাঁদটা ঢেকে যায় উঁচু অট্টালিকায়!
যেখানে ভালোবাসা গুমরে মরে
চার দেওয়ালের গায়ে,
আশাগুলো যেখানে পরিনত হতাশায়
ভালোবাসা যেখানে মুঠোফোন আর ব্যস্ততায়।
মিলতে চাই সেখানেই, সে ভাবেই;
তোর প্রিয় সাজে আর প্রিয় শহরের কালিমায়।
তোর জন্য রাজি সব ছাড়তে
বাঁচব শুধু ভালোবাসায়
মানিয়ে নেবো শহরটাকে
ফেলে আসবো সুখ আশায়
যদি কখনো গ্রামের দিকে তোর মন যায়
দেখবি সেদিন আমার আশারা
আজও তোর নামেই ফুল ফোটায়।

বছর পাঁচেক দেখা নেই আর
গর্তে ঢুকেছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে
মা-বোনেরা খালি পেটে থেকে
উন্নয়নকে ছোটায় রাস্তা ঘাটে
তবু আমাদের শিক্ষা হবে না
ভোট দিতে ছুটি সকাল-সকাল
ধক নেই সবাই নোটায় ভোট দিয়ে
বয়কট করি ভোটের উৎসব
ভাষণ দিচ্ছে দল বেঁধে এসে
জনসভায় উপচে পড়ছে ভিড়
মিথ্যে সবাই বুঝতে পারছি তবু
জবাবদিহি চাইছি না সব চুপ
ডান-বাম সবই সমান এখন
কার উপর ভরসা করা যায় ?
ভোট মানেই ঢপের প্রহসন
ভোটাধিকার যখন লুপ্তপ্রায়
তবু তোমায় নিতে হবে পক্ষ
ঝুঁকতে হবে যেকোনো এক দিকে
জীবন যখন ঝুলো-পলেস্তারা
আশা ছাড়া লাভ কি আর বেঁচে?
কোনো এক রাজা আসন পাবে
কোনো রাজার চুকবে রাজপাট
লাল সূর্য কে গারদে বন্দি রেখে
রাষ্ট্র-যন্ত্রে পিষবে নতুন প্রাণ
উৎসব যখন পালিত হয় অস্ত্র হাতে
ধর্ম যখন রাজনীতির আশ্রয় নেয়
আচ্ছে দিন ক্যায়সে আয়ে গা
ইয়ে সিষ্টেম হিতো কোরাপ্টেড হে
ঝাণ্ডাবাজির আর নেই দরকার
মানুষ আর চাইছে না রাজনীতি
কত দিন আর ভোটতন্ত্র হবে
গণতন্ত্রে কি আর আছে সম্প্রীতি।
মন ভালো হোক, মন ভালো হোক
মনকে রেখো বশে,
মনকে রেখো সবার মাঝে
আনন্দে উচ্ছ্বাসে।
মন হলো সেই ছোট্ট পাখি
উড়তে সদাই চায়,
তাইতো এ প্রাণ দূর আকাশে
উধাও হয়ে যায়।
মনই জানে মনের খবর,
ভুলতে মনের ক্ষত
দেখবে সেথায় স্বচ্ছ বাতাস
বইছে অবিরত।
তবু, আসক্তির ওই বেড়াজালে
মনকে বেঁধে রোজ
শিকল দিয়ে হানছো আঘাত
রাখছ না তার খোঁজ।
মন নিয়ে তাই বৃথাই কাঁদা
দু দিনের এই ভবে,
মন পাখি কি সদাই রবে!
ছাড়বে খাঁচা কবে!!
মনকে দিয়ো মুক্ত আকাশ
আলো, বাতাস, জল
দেখবে সেথায় রোদ ঝলমল
শিশির টলমল।
মন সাজিয়ো মনের মত
বাঁচতে চেয়ে আজ,
মন ছাড়া যে বৃথাই ছোটা
থাকুক যতই কাজ।
তাই, মন ভালো হোক সদাই চেয়ো
দুঃখ যা হয় আসুক,
চেয়ো সবার হৃদমাঝারে
তোমার ছায়া ভাসুক।।
'কবিতা কুটির' নববর্ষ সংখ্যা ১৪২৬ ডাউনলোড করা জন্য নিচের "Download" লেখা লিংকটিতে ক্লিক করুন
আমার বাড়ি এক গ্রামে।
আমার নাম.. থাক জানতে হবে না-
শুধু জেনে রাখুন আমি এক পরিচয়হীন মেয়ে।
খুব দূর্বল ভাবছেন তাই না?
ভাবছেন হয়তো খুব অদ্ভুত আমি।
জানেন আমার বাবা-মা আমাকে খুব ভালোবাসে
আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন।
আমি এখন চাকরি করি,শহরে থাকি।
ভেবেছিলাম আমার বিয়ে হবে,
অরুণ আমার অফিসের সহকর্মী।
আমাদের বিয়ে ঠিক হলো জানেন?
ভালোবাসতে চেয়েছিলাম আমি-
কিন্তু কপালে আমার সুখ সৈইলো না।
একদিন আমারা ঘুরতে গেছি অজানা পথে,
অরুণ আমার হাত ধরে বললো-
আমাকে বিয়ের আগেই কাছে পেতে চায়।
রাজি না হতেই আশপাশ থেকে ছুটে আসে---
ওর নোংরা, জানোয়ার বন্ধুরা,
পশুর মতো আমাকে শেষ করে দিলো।
আমার প্রচন্ড চিৎকারে জেগে উঠলো মাটি,
জ্বলতে লাগলো দাবানলের তীব্র দহন---
কিন্তু কেউ শুনলো না আমার কন্ঠস্বর।
আজও আমার কলঙ্কের দাগ আমায় আঘাত করে-
পথে-ঘাটে, অফিসে-আদালতে
আমার পরিচয় বলে কিছু রইলো না,
আমি এক পরিচয়হীন মেয়ে।
পুরুষেরই মতো জন্মায় এরা,
সমাজে জ্বালায় বাতি,
সবদিক থেকে পিছিয়ে আজও-
এরা সেই নারী জাতি।
মায়ের কোলে ছেলে এলে,
বাড়ে বাপের মান,
কোনো কারনে মেয়ে হলে তা-
বাড়ীর অকল্যাণ !
শৈশবে তার আঁচলেই নাকি,
ছিল তোমার স্থান, পরে-
যৌন খিদেয় সেই আঁচলেই ;
মারছো তুমি টান।
লোকে বলে তারা সর্বনাশা,
নেই যে তাদের বল,
তারা কেবল পুরুষ সেবক-
বাচ্চা গড়ার কল।
বলছি তবে শোনো এবার,
আমরা কি কি পারি-
হাড়ে হাড়ে তবে বুঝবে তুমি,
কাদের বলে নারী ?
অবলা ভেবে নারীর ওপর,
করছে যারা হাল্লা,
জানেনা তারা সবস্তরে আজ-
নারীরা দিচ্ছে পাল্লা।
পাইলট থেকে রেল ড্রাইভার,
অফিস থেকে স্কুল-
সর্বত্র নারীরা কাজে ,
একেবারে নির্ভুল।
ফিরে দেখো তবে সংস্কৃতি,
শিল্পকলার গুণ,
গৃহকর্মেও নারীরা আবার-
একেবারে নিপুণ।
সমাজের বুকে সাজানো বাগানে,
নারীরা আসল মালী,
তিলে তিলে এরা গড়েছে সমাজ-
শুনেছে হাজার গালি।
এরপরও নারী কলঙ্কিনী!
চরিত্র যে তার দাগী, শুধু-
বড়ো দামী হয় রাতের সুখে;
বলো কে দোষের ভাগী?
সবশেষে তাই বলছি শোনো,
নারীকে করো ভক্তি,
পাবে না যে পার, যদি জেগে যায়-
আমাদের নারীশক্তি।
খরো রোদ নেয় শক্ত ঢিলার ঘ্রাণ
প্রতিবেশী মেয়েটি হেঁটে যায় লাল ব্লাউজের শরীরে
কলঙ্ক এঁকে দেয় সূর্য নামের পুরুষ
সূর্যমুখী ফুলের ছায়ায় কিছু সময় নীরবতা
অতন্দ্র সীমান্তে মাটির দেওয়াল
প্রাণভয়ে মেয়েটি লজ্জাবস্ত্র গায়ে জড়ায়
ঝোঁকে পড়ে সূর্য আদর মাখায়
নতুন আলোর প্রাণে সারা গাঁ বেঁচে ওঠে
মৃত্তিকাচারী মেয়েটির স্পর্শে ।
আবার একটা কালো দিন এলো
মৃত্যু এসে ছিনিয়ে নিলো প্রাণ
ঈশ্বর আল্লা কোথায় গেলো God
কোন ধর্ম মুছিয়ে দিলো জল?
রক্ত ধোয় বৃষ্টি জলের স্রোতে
হয়তো মিশবে অশ্রু ধারাও তাতে
নিভবে কি আর সদ্য জ্বলা চিতা
প্রথামাফিক কবরে ঢুকবে লাশ
মানুষ বেশে এসেছিলো এরা
হিংস্রতায় ঢাকা শরীর দেহ
মানুষ মারা এদের রোজের পেশা
নৃশংসতায় একমাত্র ধর্ম
আমরা ভারতবাসীও সমান শোকাহত
পড়শী হলেও সমান অংশীদার
শান্তি হোক সবার উপর বর্ষিত
সবার আত্মায় স্বর্গে মুক্তি পাক।
জীবন বৃক্ষে ধরা ফুলের কুড়ি,
আরো একবার ঝরে গেল কালবৈশাখীর ঝড়ের প্রকোপে।
বৃক্ষস্বরূপ গাছের যৌবনকালে প্রবাহিত আরো
একটা বসন্ত,
যুবকের কাঁধে বেড়ে ওঠা ডাল পালাগুলি শক্ত ঢালাই সমৃদ্ধ।
পৌঢ়ের প্রথমার্ধে পদার্পনের
অবকাশে কেটেগেল উন্ত্রীসটা
বসন্ত বিলাপ,
ধেয়ে আসে মরুহীন তপ্ত বাতাস,বয়ে যায় শীতল সমুদ্রে
উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত।
মৃত্তিকহীন গাছের দন্ডায়মান, আজ শিকড়ের আলিঙ্গন করা
গভীর নিম্নগামী ভুগর্ভের দিকে।
বেঁচে থাকার প্রবাদে বারির সন্ধানে তপ্ত মাগমার দিকে অগ্রসররত,
অপেক্ষা শুধু আরো একটা বসন্ত বিলাপের।
একটা কবিতা লিখো,
আমার জন্য
অকবিতাও লিখতে পারো
আর... আর... আর শোনো -
গুরুচন্ডালি দোষ থাকলেও -
রাগ করবোনা একটুও।
তুমি কেবল কবিতা লিখো
প্রেমের কবিতা।
লাল গোলাপ, রেস্তোরাঁ,
বাহারি পাখির কলরব -
কিংবা... কিংবা ওই -
পার্কের চুম্বন না থাকুক;
না থাকুক নখের আঁচড়,
এলোকেশীর মরনদশা।
প্রেমের কবিতা তো!
লক্ষ্মীটি,প্রেমটুকু রেখো।
বলি ও মেয়ে তোর লজ্জা করেনা!
বিধবা মানুষের আবার কিসের আয়না?
কেন গো লজ্জা করবে
আয়না ছাড়া কিভাবে মুখ দেখবে?
শোন অভাগী আমরা হলুম বিধবা
ওই সখ আহ্লাদ আমাদের সাজেনা!
কিন্তু আমারও যে ইচ্ছে করে
ওদের মতো কাজল দি চোখের পরে,
আমাদের জীবনের সবটাই সাদা
বলে দেয় পড়নে পড়া ওই থানটা!
আবার নাকি কাজল,
বিধবা জগতে ওসব যে অচল।
আমারও তো ইচ্ছে করে
জীবন সাজাই নতুন ঘরে!
কি বললি মুখপুড়ি?
মৃত্যু পরে বাস হবে তোর নরকপুরী!
সাদা থানে রঙ দেখা?
ওরে সমাজে যে ভীষন বাঁধা!
সাদা মনে রঙ নেই
ওই মুখে তাই সঙ নেই,
পরপুরুষে নজর আমাদের পাপ
কারনটা সমাজ নামক অযাচিত চাপ!
ওকে উড়তে দাও
ও যেতে পারে বহুদূর - যা তোমার অজানা,
ঝড় ঝাপটা, মেঘ বাদল সবের উপেক্ষায়
উড়তে পারে বহুদূর।
ওর জন্য এক মুঠো রোদ এক বিকেল আকাশ
বিছিয়ে দাও রঙিন ডানায়,
ও পরে গেলে সাহস যোগাও বাতাস হবার।
পাখিটাকে খাঁচায় বন্দী রেখো না
শিকল খুলে স্বপ্ন দেখাও
উড়তে দাও নীল আকাশে
দূরে বহুদূরে,
জানো তো, ও যায় বহু দেশে
সাদা পরীর দেশ কখনো বা আগুন পরীর দেশ
ও জানে অনেক কিছু - যা তোমার অজানা।
পাখিটাকে দৈত্য দানবের ভয় দেখিও না ,
দূর সীমান্তে এক ফালি কালো রং তুলি
ও জানে দুর্যোগের আভাস
রোদের পরে কালবৈশাখীর বাতাস,
স্ব এর অধীন বড্ড বাজে - বলে
আকাশ জুড়ে পাঁচিল তুলো নাকো,
কালের নিয়মে মৃত্যু আসে বটে
পাখি তখনও সবুজ ঘাসে বাসা বাঁধে।
পাখিটাকে রবিবাবুর তোতা করো না
শিখতে দাও ও যা চায় ,
ঠেসে ঠেসে বিদ্যে ঠেলে বন্ধ করো না
পাখির পেটের সবুজ থলি,
ওকে দাও মুঠো মুঠো ফল
মুছে যাক বদ্ধ মনের অদৃশ্য কালি
বাঁচতে দাও ওদের মত করে
দেখো, উড়ে যাবে একদিন
মরুর দেশের যত চোরাবালি ।
মনের মধ্যে যেন এক অনৈচ্ছিক প্রাপ্তি ভাব জেগে উঠেছিল |
মনে হয়েছিলো উদ্দেশ্য বিহীন ভাবে চলা
এ তরী আজ কিনারা খুঁজে পেল !
ভেবেছিলাম !
প্রবাহের স্রোতে জমে থাকা আবেগ গুলো কে ভাগ করে নেব ,
ভাগ করে নেব আত্মশুদ্ধির পরিতুষ্টি |
পাশেই ছিলে তুমি মনের নাগালে ,
অদেখা দৃষ্টিকোণের আড়ালে ,
তোমার আমার চেতনার প্রণয় হতো মুহূর্তের অন্তরালে |
অন্ধকারের যাত্রী একাকী আলো , আমি !
যেন প্রতিফলনের সূত্র খুঁজে পেয়েছেলাম , তোমার মধ্যে দিয়ে !
আমার সমস্ত উদারতা ,জ্ঞানের বিহ্বলতা ,
উৎসর্গ করেছিলাম তোমার আত্মসৃষ্টির সার্থে |
তুমি আছো আজও ...যেমন ছিলে তেমন! মুক্তাকেশী পাখি তুমি , নিজের রাজ্যের রাজকন্যা ,
তোমার কাছে আমার অস্তিত্ব যেমন মরুভূমির বন্যা |
বৈষম্যবাদের ভয় আজ আমার আকাশের অপ্রস্তুত সূর্যাস্তের কারণ ,
বিচক্ষণ নাবিকের কম্পাস আজ দিকভ্রান্ত, দক্ষিণ মেরুর টানে |
অসময়ে বৃষ্টি নামে বেড়াজালে ঘেরা মনে |
দিগন্তের ঝাপসা আলো আজো স্বপ্ন দেখায় ,
নবজাগরণের !
যা অনৈতিক সত্যের মতো অলীক ,
রোদ জল বৃষ্টিতে পোড়া অনুভব হেমন্তের কৃষ্ণচূড়ার নীচে দাঁড়িয়ে থাকে |
বেড়াজাল থেকে মুক্তির আশায় |
যেন সব কথা এবার থেকে আঁচল বলবে না, ঠোঁট বলবে না
বলবে শুধু
একটা হাতের ওপর রাখা একটা হাত
আর জড়ানো আঙ্গুলগুলো,
যার প্রতিটি স্পর্শ এনে দেবে
ভালোবাসার শিহরণ মনের আনাচে কানাচে
আর মায়াবী কাজল পরিয়ে দেবে চোখের পাতায়
বলবে শুধু
একটা হাতের ওপর রাখা একটা হাত
আর জড়ানো আঙ্গুলগুলো,
যার প্রতিটি স্পর্শ এনে দেবে
ভালোবাসার শিহরণ মনের আনাচে কানাচে
আর মায়াবী কাজল পরিয়ে দেবে চোখের পাতায়
না। আজ আর কোনো কথা নয়
আজ থাক না ভালোবাসা
শব্দের অবরণমুক্ত হয়ে
আজ থাক না ভালোবাসা
শব্দের অবরণমুক্ত হয়ে
থাক ভালোবাসা আজ
শুধু নির্দোষ স্পর্শের মদিরতায়
মাতাল হয়ে।
শুধু নির্দোষ স্পর্শের মদিরতায়
মাতাল হয়ে।
আর অন্ধ রাতে কে যেন সাইরেন দেয়।
অতপরঃ কিছু সময়;
নতুন স্বপ্নে আশায় চোখ জুড়ে যায়।
ওঠ জেগে ওঠ; কী ঘুমে মগ্ন ?
লিখতে হবে সত্য তাজা খবর,
বলবি মনুষ্যত্ব কেন বর্বর ?
সমাজতত্ত্ব কেন নগ্ন ?
তারপর ক্লান্তি ভরা চোখ–
কবিতা বলে আর একটু লেখ।
সায়াহ্ন বাকি অনেক;
লেখ বিতাড়িত ভালবাসার শোক।
নিপীড়ন, হানাহানি, ধর্ম
বিষয় এখন অনেক বাকি
আবদার করে কবিতা।
মিথ্যা লিখে করবি না পাপ কর্ম ।
'অশ্বত্থামা হত ইতি গজ'
নিদারুণ সত্য কথা শুনে,
দ্রোণাচার্য ব্যথা পান মনে,
ক্ষনে ক্ষনে মিথ্যা বলি আজও।
নীল রঙের পাহাড়
নীল রঙের পাহাড় হয় না কি ?
নীল রঙ তো সমুদ্রের!
তাহলে সমুদ্র কিনবো।
সমুদ্র কিনবে ?
সমুদ্র আবার কেনা যায় নাকি ?
তুমি বরঞ্চ একটা আস্ত নদী কেনো।
শান্ত একটা নদী।
যে কুল কুল শব্দে বয়ে যাবে।
যার পাড়ে বসে তুমি ঢেউ গুনবে।
দেখবে পানকৌড়ি কেমন টুপ করে ডুব দিয়ে
ভেসে ওঠে দূরে গিয়ে।
মাছরাঙা মাছ ঠোটে
বসে কেমন মগ ডালে।
শান্ত নদী তো আমার পছন্দই নয়।
আমার পছন্দ দুরন্ত, স্রোতশীলা এক নদী।
যে মুহুর্তের মধ্যে বিপুল জলরাশি নিয়ে
আছড়ে পড়বে।
বয়ে যাবে বহুদূরে।
তবে তুমি পাহাড়ী ঝরনা কেনো।
দূরন্ত গতিতে পাহাড়ের ওপর থেকে
আছড়ে পড়বে।
অসংখ্য জলরাশি
বাষ্পের মতো ভেসে বেড়াবে।
যার গায়ে সূর্যের আলো পড়ে
রং বেরঙের প্রজাপতি হয়ে উড়ে
বেড়াবে বাতাসে।
আমার পাহাড়ী ঝরনা চাইনা।
আমার চাই একটা আগুন রঙের মেঘ।
যে আগুন রঙের মেঘ ফুলকি ওড়াবে।
এবং যে ফুলকি সঞ্চারিত হবে
প্রতিটি তাজা প্রানে।
যারা সমস্ত দুর্নীতি, হতাসা, ভেঙে মুচড়ে
নূতন এক ভারতবর্ষের জন্ম দেবে।
পুব দিগন্তে উঠবে নতুন সূর্য,
নতুন দিনের ভোর।
যুদ্ধই কি আমাদের সমাধান সূত্র?
যুদ্ধ কি পারে সমস্যা মেটাতে ?
তবে কি আমরা ভুলেছি গান্ধীর অহিংস নীতি?
ভুলেছি বিলের শান্তির বাণী?
তারাও তো যুদ্ধ লড়েছিল তবে তা ছিল শান্তির জন্য যুদ্ধ।
আমরা যে যুদ্ধ লড়ছি তা যে অনন্ত
এ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ।
এ যুদ্ধের নেই শেষ,নেই কোনো সীমানা
এ যুদ্ধ যে শুধুই রক্ত আর মৃত্যুমিছিল
শূন্য হবে মায়ের কোল,দেশ হারাবে তার বীর সৈন্য।
রাজার শক্তি-দম্ভ-হিংসাই
আজকের রাজনীতি।
যুদ্ধ হোক মেধার;
যুদ্ধ হোক প্রগতির;
দেশ দখলের যুদ্ধ, রক্তের যুদ্ধ, স্বজনহারার যুদ্ধ;
এ কি সত্যিই কাম্য।
তোমার সঙ্গে তো আজকের পরিচয় নয়,
সেই কবে তুমি এসেছিলে আমার জীবনে,
ধীরে ধীরে তোমার বড় হয়ে ওঠা
তোমার দেহ বল্লরী সূর্য স্নাত হয়ে
সবুজ গরিমায় সালোক সংশ্লেষ নিঃশর্ত
ভাবে বিতরণ করেছে আমায় অনাবিল ভাবে
দিন রাত কিছু নাভেবে।
কত রাত কেটেছে তোমার সাথে কথাবলে
নিঃশব্দ বাক্যালাপে।
চোখ পড়েছে তোমার ওপর ওদের
আমি বুঝি তোমার ভয়ার্তনাদ
ঝিরি ঝিরি শব্দে ঝরে পড়ে।
আজ তুমি নেই, সেই শালিখ কিংবা কোকিল টা
আর ডাকেনা, শুধু রয়ে গেছে কালো রাস্তার অহংকার
তোমার বুকের ওপর দিয়ে চলে গেছে সে
কালো বিষাক্ত কাল নাগিনীর মতো অনন্তের পথে।
অনেকদিন পর চিনলাম মেঘ তোকে
তারপর পাঠ নিলাম তোর ভালোবাসার।
কত না আবদারে, আল্লাদে আটখান
পরিপাটী তোর বিন্যাস।
আজকাল হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা পথ
মেঠো পথ ধরে এলোমেলো
কিংবা যখন প্রার্থনা ঈশ্বরে
একফোঁটা বৃষ্টির জন্য,
ব্যাকুলতা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে
সংসার নামক গৃহসন্ন্যাস থেকে,
ঠিক সেই মুহুর্তে তোর এলোকেশী বিন্যাস,
আকাশ জুড়ে ডাকাডাকি।
আমাকে প্রশান্তি দিবি বলে হতশ্রী কাল বোশেখী
করেছিস সংকল্প মনের সন্ধিকোণে।
আমি তখন ব্যাকুলতা নিয়ে তোর অপেক্ষায়
থাকি দিন মন যাপিত করে।
ইদানিং তাই ক্লান্ত পথে আকাশের দিকে তাকাই
কখন তুই আসিস প্রশান্তি হয়ে।
মাঠঘাট পথে প্রান্তরে,
অবশেষ ঈশ্বরকনা বর্ষিত হয় ধরাধামে।
আমি মন ভাসিয়ে,
জলপদ্ম আঙিনায় নাচানাচি করি মেঘ
তোর জন্য যত প্রার্থনা ঈশ্বরে!
গভীর রাতে হাতড়ে বেড়াই তোকে,
আমার না পাওয়ার অব্যাক্ত ভালোবাসার মাঝে !
মনে পড়ে ?
দোলের দিনে সবার অলক্ষে যেদিন রাঙিয়ে দিলি-- আমার সীমন্তরেখা !
তোর বাহুডোরে আটকে পড়ে লজ্জায় মাথা নত হয়েছিল আমার !
তখন আমার লজ্জায় রং মিশিয়ে দিয়েছিলো তোর একটা চুম্বন !
এর পর কেটে গেছে বহু সময়, কাজের বেস্ততায় একটু একটু করে, দূরে সরে গেছে আমাদের ভালোবাসা !
এখন তো মডার্ন যুগ তাই মুঠো ফোনে, ল্যাপটপে দিব্বি কথা হয় প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে !
দেখাও হয় দিনের শেষে,
তবে ভালোবাসাটা আর হয়ে ওঠেনা সেই আগের মতন !
এখনো রোজ রাতে আদর করিস আমায়, হয়তো এটা নিয়ম !
তবুও কেন মনে হয় ? ----
সবই কৃত্রিম !
এ ভালোবাসা নিছকই কর্তব্য বা......
জীবনের পথ ধরে চলে যাওয়া অভ্যস্থতা !!
পূজো দেব না আমি তোমাদের মন্দিরে,
আমি বিশ্বাস করি না ঐ পোপের চার্চে,
আমি আবার গড়ব নতুন মঠ।
যে মসজিদের জন্য তুমি আমায় খুন কর,
যে মসজিদের প্রবেশে রহিম, আকবর, রাক্লাকে
পদপিষ্ট করে; আমি অস্বীকার করি সেই আল্লাহকে।
আমি সেই মৃতস্তূপ ভেঙ্গে গড়ব নতুন মঠ।
যে মন্দিরে তুমি বসিয়েছ রাজনীতিবিদকে,
যে মন্দিরে মাথা ঠেকাও মহিষের হত্যাকারিণীর কাছে,
নির্বোধ অবোধ অসুরকে দাবার চালে মাত দিয়ে
উলঙ্গ নৃত্তে উত্তাল করে স্বর্গমর্তপাতাল যে ভিখারিনী,
আমি তার কাছে নিজেকে নতজানু করতে অস্বীকার করি।
আমি সেই আস্তাকুড়ে গড়ে তুলব নতুন মঠ।
যে দেবতার ঠুনকো শরীরে নেই কোন জোর,
যার পেশীতে নেই আত্মরক্ষার ক্ষমতা আর বাহুবল,
সে আর যাই হোক, নই আমার রক্ষক আর ঈশ্বর,
ভেঙ্গে ফেলব ঐ ক্রস, গুড়িয়ে দেব রোমের গির্জা।
আমি সেই ধ্বংসস্তুপে আবার গড়ব নতুন মঠ।
শুনতে চাই শুধুই শুনে যেতে চাই, যা আমার মনের ভালো থাকার কারন
যা কিছু আমার হৃদয় ঘিরে, আমার অস্তিত্বে সৃষ্টি করে শান্তির বাতাবরন।
খোলা জানলার ওপারে যে উন্মুক্ত জগতের হাতছানি
নীল নির্মল গগনে মুক্ত বিহঙ্গের যে অবাধ দুর্বার গতি।
ভোরের সাথে সাথে আমার উদ্যানে আসে কত না রঙ্গিন পাখি
সেই রং আর গাছগাছালির সবুজিমা মিলেমিশে ভরায় আমার আঁখি ।
দেখতে চাই আমৃত্যু দেখে যেতে চাই প্রকৃতির সে দৃশ্য মনোহর।
কবির কলমে ফুটে ওঠা প্রকৃতি আর জীবনের প্রকৃত মেলবন্ধন
ভালবাসায় আর ভালো লাগায় পূর্ণ করে আমার প্রান মন ।
সেই কথকের কথা, সেই পাখির কলতান সেই গাছেদের গোপন কথোপকথন
আমি শুনতে চাই প্রতিদিন শুনে যেতে চাই এইভাবে শান্তিতে আজীবন।
আমি কিছু লিখতে পারলাম না
জানিনা কেন?
কখনো এরকম হয় না।
যে কোনো কারোর দিকে তাকিয়েই আমি---
ঠিক কিছু না কিছু একটা লিখেছি ঠিক-ই
কারোর হাস্যকর স্বভাব বা ত্রুটি নিয়ে।
সেসব লেখাকে কবিতা বলতে পারো.... সহজেই।
তবু কেন এমন হল.....
আসলে কি.....কবিতা লেখার পর আমি
প্রত্যেকবার সেই কবিতাকে দেখতাম।
কিন্তু তোমাকে দেখেই যেন কবিতা মনে হল....
তাই আর কিছু লেখা হয়ে উঠল না।
যে দেখেছিলো অজস্র তারার ফাঁকে চাঁদের খেলা,
দিগন্তের শেষ সীমায় পৌঁছাতো যার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ;
অপলক চাহনিতে ভেসে উঠতো পূর্ণতার আকাশ,
যার অব্যর্থ নিশানায় কেটে যেতো অমোঘ আঁধার।
আজ কেন সে অন্ধ হয়ে পড়ে আছে বন্ধ ঘরে ?
দিগন্তের শেষ সীমায় পৌঁছাতো যার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ;
অপলক চাহনিতে ভেসে উঠতো পূর্ণতার আকাশ,
যার অব্যর্থ নিশানায় কেটে যেতো অমোঘ আঁধার।
আজ কেন সে অন্ধ হয়ে পড়ে আছে বন্ধ ঘরে ?
এটাই কি সেই বুক !
যে ধারণ করেছিলো প্রেম কাননের অগণিত পুষ্প,
যার আশ্রয়ে পাখিরা পেয়েছিলো রঙিন পালক ;
যার উন্মাদনায় ভেসেছিলো নীলাকাশের তপ্ত মেঘ,
জোনাকিরা মেতেছিলো লুকোচুরি খেলায়।
আজ কেন সে শূন্যলোকে পড়ে আছে স্তব্ধ হয়ে ?
যে ধারণ করেছিলো প্রেম কাননের অগণিত পুষ্প,
যার আশ্রয়ে পাখিরা পেয়েছিলো রঙিন পালক ;
যার উন্মাদনায় ভেসেছিলো নীলাকাশের তপ্ত মেঘ,
জোনাকিরা মেতেছিলো লুকোচুরি খেলায়।
আজ কেন সে শূন্যলোকে পড়ে আছে স্তব্ধ হয়ে ?
এটাই কি সেই হাত !
যে ছুঁয়েছিলো অনন্ত গোধূলির অসীম পাহাড়,
যার মুঠো জুড়ে ভরে ছিলো হাজার জ্বলন্ত নক্ষত্র ;
যার ছোঁয়ায় ফুটেছিল একরাশ সাদা পদ্মফুল,
ছুঁয়েছিলো রাতের গভীরে জোৎস্নাসিক্ত অরণ্য।
আজ কেন সে অশান্ত নীড়ে পড়ে আছে ক্লান্ত হয়ে ?
যে ছুঁয়েছিলো অনন্ত গোধূলির অসীম পাহাড়,
যার মুঠো জুড়ে ভরে ছিলো হাজার জ্বলন্ত নক্ষত্র ;
যার ছোঁয়ায় ফুটেছিল একরাশ সাদা পদ্মফুল,
ছুঁয়েছিলো রাতের গভীরে জোৎস্নাসিক্ত অরণ্য।
আজ কেন সে অশান্ত নীড়ে পড়ে আছে ক্লান্ত হয়ে ?
যে দেখিয়েছিলো নশ্বর ভুবনে অনন্তের পথ,
জ্বেলেছিলো অন্ধকার নিশীথে আলোর প্রদীপ ;
যাকে পাওয়ার আশায় কেটেছে হাজার নির্ঘুম রাত,
যে শুনিয়েছিলো হতাশের কানে আশার বাণী।
আজ কেন সে অধরা হয়ে পড়ে আছে ব্যর্থ আলয়ে ?
যখন ফিরে তাকাবে,
দেখবে আমি আর নেই! আমি একটু
অবকাশ চেয়েছিলাম অবসরে তোমাকে নিজের করে পাওয়ার,
তোমার নামে আমার নিখাদ মন সঁপে দিতে চেয়েছিলাম।
তোমার লোমশ বুকে কান পেতে হৃদযন্ত্রের কথা শুনতে চেয়েছিলাম।
তোমাকে তোমার থেকে বেশী করে জেনে,
আগলে রেখেছি পরাণ খাঁচায়।
জানি,আগামী দিনে তুমিই আমার একাকীত্বের রসদ হবে।
আমি খোলা আকাশ ভালোবাসি,
আমি পাকা কেশী নোনা জল লোভী।
আমি ভাবনার পায়া আঁকড়েই বাঁচি।
এসব আজীবন ডায়েরীর কোলেই লিখে এসেছি।শুধু,
তোমাকে জানাতে পারিনি কারণ;
তোমাকে জানা আর বোঝার মধ্যগগনে
নিজেকে তোমার চোখের পাতায় সাজানোর কোনও সুযোগই পাইনি!
আমি সারাটাজীবন তোমার মূহুর্তের সাক্ষী হয়েই থাকব।
আর তুমি?
তুমি হবে আমার সেই অভিলাষী রক্তিম আবীর।
পুরোনো একটা সাইবার ক্যাফেতে বসে একজন খয়াটে চেহারার যুবক টাইপ করছিল তার শেষ হয়ে যাওয়া জীবনকাহিনী । ছোটখাটো প্রবন্ধখানা লিখতে লিখতে তার আঙুলের সাথে যেন উঠে এলো কিবোর্ডের কি-গুলো !
রাত ১.৩০ টার সময়
ক্যাফের মালিক প্রতিদিনই একবার ঘুম থেকে ওঠেন । স্বভাবমতই দোকানঘরের দিকে
যেতে গিয়ে কানে এলো কিবোর্ডের খুটুর-খুটুর শব্দ । তিনি ভাবলেন , চোর হলে তো
কম্পিউটারে গেম খেলতে বসবে না , সেটা সে কম্পিউটারখানা তুলে নিয়ে গিয়ে
বাড়িতেই করবে । কিন্তু এ আবার কিরকম চোর ! সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই ঢুকে যা
দেখলেন তাতে তিনি বিস্ময়ে বাকরহিত হয়ে গেলেন । দেখলেন কম্পিউটারের
word-sheet খোলা , কিবোর্ডে খটাখট টাইপ হয়ে যাচ্ছে কিছু শব্দ , কিন্তু বসার
রিভলভিং চেয়ারে কেউ নেই ! ভয়ে-উত্তেজনায় কাঁপতে লাগলেন তিনি , ভাবলেন গিয়ে
ডেকে আনবেন তাঁর মেয়েকে । কিন্তু সেটা আর পারলেন কই ! হঠাৎ তাঁর নজরে পড়লো
, word-sheet-এ তাঁর মেয়ের নাম লেখা । চুপচাপ এগিয়ে গিয়ে রুদ্ধশ্বাসে পড়তে
লাগলেন তিনি , যতক্ষণে পড়া শেষ হলো ততক্ষনে কিবোর্ডের খটাখট শব্দ থেমে
গিয়ে চারিদিকে একটা গভীর নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে । আতঙ্কে দিকবিদিক
জ্ঞানশূন্য হয়ে তিনি ছুট লাগালেন মেয়ের ঘরের দিকে । বন্ধ দরজায় ক্রমাগত
করাঘাতেও যখন কেউ দরজা খুলল না , তখন ছেলেকে ডেকে আনলেন তিনি । ছেলে দরজা
ভাঙলে সবাই ঘরে ঢুকে দেখলো মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পাখা থেকে ঝুলছে !
আর্তনাদ করে অজ্ঞান হয়ে গেলেন তাঁর গিন্নি , মেয়ের এরকম পরিণাম সহ্য করতে
পারলো না কেউ ।
কি ছিল সেই word-sheet-এ ?
কম্পিউটারের স্ক্রিনে তখনও ভাসছিল সেই সামান্য জীবনকাহিনী । সেই খয়াটে
চেহারার যুবকটি আসলে বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল , এই স্বপ্ন তাকে
দেখতে সহায়তা করে সেই মেয়েটি । কিন্তু একদিন সব স্বপ্ন চুরমার করে নিজের
নতুন প্রেমিকের কথা জানায় ছেলেটিকে । কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই
পরপারে যাত্রা করে ছেলেটা । কিন্তু সে চেয়েছিল পরপারেই সংসার পাততে , তাই
তার অপূর্ণ আশা তাকে শান্তি দেয়নি । সে ফিরে আসে মেয়েটিকে নিজের সাথে নিয়ে
যাওয়ার জন্য । সবশেষে নিজের ব্যর্থ জীবনকাহিনী সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করে
সে , সঙ্গে জুড়ে দেয় মেয়েটার সুইসাইড নোটখানি , যেটা ছেলেটার স্বরচিত!
এই শহরের প্রাচীর ভেঙ্গে যায় সহজে
খামচে ধরতে গেলে রক্তাক্ত নখের শরীর।
জড় পদার্থের যতো প্রাণ,
ঘাড়ের উপর চাপিয়ে দিয়ে গেছে বর্ষপঞ্জিকা অভিশাপ
তোমার চোখের অভিমান;
ঠোঁট কাঁপা অভিযোগে লেগে আছে হৃদপিণ্ডের কম্পনজনিত ভয়
আমার মৃতের মতো পরে থাকা,
যুক্ত ক্ষয়।
না, তুমি কেবল প্রেম নও,
এক অদ্ভুত ঋতুচক্র, আর
বহুকাল হতে আজও ভারী হাতে লেখা চিঠি।